রায়গঞ্জে ৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ছাড়াই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম

 সিরাজগঞ্জ, ১ ডিসেম্বর ২০২৪ — সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় ৯৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে, যা শিক্ষা কার্যক্রমে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানসহ বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

পদশূন্য প্রধান শিক্ষক

রায়গঞ্জ উপজেলায় মোট ১৮৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে শিক্ষক সংখ্যা ১ হাজার ৯৭ জন। তবে, নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক সংখ্যা হওয়া উচিত ছিল ১ হাজার ১৯২ জন। এর মধ্যে ৯৩টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। অনেক বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকলেও, সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের মতানৈক্য এবং দায়িত্বের ভারবহন সমস্যা সৃষ্টি করছে।

শিক্ষকদের অভিযোগ

প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে দায়িত্ব পালনরত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তাঁদের ওপর অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপানো হচ্ছে। প্রধান শিক্ষকের কাজ যেমন দপ্তরী কাজ, শ্রেণিকক্ষে পর্যবেক্ষণ, শিক্ষকদের পরিচালনা, সভা-সেমিনারে অংশগ্রহণ ইত্যাদি একসঙ্গে করতে হচ্ছে, যা তাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। নিয়মিত প্রধান শিক্ষক একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও দক্ষ ব্যক্তি হিসেবে এসব কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারেন, কিন্তু ভারপ্রাপ্তরা একযোগে সব কাজ করতে গিয়ে অক্ষম হচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় বিঘ্ন

অভিভাবকরা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় বিদ্যালয়গুলো অনেকটাই অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীরা যথাযথ নেতৃত্বের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এবং বিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রতিক্রিয়া

রায়গঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আপেল মাহমুদ জানান, শূন্য পদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, পদোন্নতি ফাইল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে এবং মামলার জটিলতা নিরসন হলে বিষয়টি দ্রুত সমাধান হবে।

অতীতের সমস্যা ও ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি

এ পরিস্থিতি একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে সামনে উঠে এসেছে, কারণ প্রধান শিক্ষক ছাড়া বিদ্যালয় পরিচালনা হলে শিক্ষার গুণগত মান কমে যায় এবং অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা অকার্যকর হয়ে পড়ে। এটি প্রমাণ করে যে, শিক্ষকদের দক্ষতা এবং পরিচালনার জন্য একজন প্রধান শিক্ষক অপরিহার্য। বিদ্যালয়গুলোর সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

এখন প্রশ্ন হল, রায়গঞ্জের ৯৩টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হলে কি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে? শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, তবে এজন্য এখনই কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url