মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এবং শিক্ষকদের ৪ দফা প্রস্তাবনা
খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টাকে মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণ, শিক্ষকদের প্রশাসনিক পদায়ন বন্ধ রাখা, এবং শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবিতে ৪ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছেন শিক্ষকরা। আজ (মঙ্গলবার) খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে শিক্ষকদের একটি দল স্মারকলিপি প্রদান করেন এবং মানববন্ধন করেন।
শিক্ষকদের প্রধান দাবিগুলো:
১. মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ: বাংলাদেশে মাধ্যমিক স্তরের ৯৭% শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারি। একই পাঠ্যক্রম, পরীক্ষা পদ্ধতি এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের মধ্যে আর্থিক এবং সামাজিক বৈষম্য স্পষ্ট। এই বৈষম্য দূর করতে এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে মাধ্যমিক স্তরের স্কুল ও মাদরাসাগুলো জাতীয়করণ করার দাবি উঠেছে।
২. শিক্ষকদের প্রশাসনিক পদে পদায়ন বন্ধ: শিক্ষকরা একাডেমিক কাজে দক্ষ হলেও প্রশাসনিক কাজের জন্য তারা প্রশিক্ষিত নন। প্রশাসনিক পদে শিক্ষকদের পদায়ন করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের শূন্যতা তৈরি হয় এবং শিক্ষার মানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। শিক্ষকদের দাবির মধ্যে রয়েছে শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের পদায়ন করা এবং শিক্ষকদের কেবলমাত্র একাডেমিক কাজে নিযুক্ত রাখা।
৩. এসইএসআইপি কর্মসূচির পদগুলো রাজস্ব খাতে স্থানান্তর: মাধ্যমিক শিক্ষার মাঠ প্রশাসনে কাজ করা ১১৮৭টি পদ, যা বর্তমানে এসইএসআইপি (Secondary Education Sector Investment Program) কর্মসূচির আওতায় রয়েছে, তা দ্রুত রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের দাবি জানানো হয়েছে। এই পদগুলোতে নিয়োগপ্রাপ্ত জনবল মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
- শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন: বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন সমস্যা নিরসনে এবং বৈষম্য দূরীকরণে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান, যেমন- সরকারি ও বেসরকারি স্কুল এবং মাদরাসাগুলোর মধ্যে বৈষম্য কমাতে শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকীকরণ জরুরি।
মানববন্ধন ও প্রস্তাবনার প্রেক্ষাপট
শিক্ষকরা দাবি করেন, শিক্ষাব্যবস্থায় বর্তমানে যে বৈষম্য এবং সংকট বিদ্যমান, তা শিক্ষার মানোন্নয়নে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এ অবস্থার উন্নয়ন করতে হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণ, শিক্ষা প্রশাসনের স্বচ্ছতা এবং একটি শক্তিশালী সংস্কার প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।
সমাপ্তি
শিক্ষকদের ৪ দফা দাবি শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। শিক্ষা উপদেষ্টার নেতৃত্বে শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন দিশা আসার আশা করা হচ্ছে, যেখানে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যমুক্ত এবং উন্নত শিক্ষার অধিকারী হতে পারবে।